মধু স্বাস্থ্য রক্ষার প্রাকৃতিক উপায় - শক্তি থেকে রোগ নিরাময়।

জাফরানের ২০ উপকারিতা ও অপকারিতা - জাফরান ব্যবহারের নিয়ম

মধু আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি খাবার।সৃষ্টিকর্তার প্রেরিত গুরুত্বপূর্ণ খাবার হচ্ছে মধু।  এর দ্বারা যেমন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে ।তেমন মধুর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া খুবই কম। প্রতিদিন কোন ব্যক্তি যদি মধু পান করে/ তার শরীরের ক্ষয় পূরণ ,বৃদ্ধি সাধন ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়।

মধু খেতে কে না পছন্দ করে। শিশু থেকে শুরু করে বুড়ো পর্যন্ত সবাই মধু পছন্দ করে । মধু সবাই খেতেও পারে মধুর উপকারিতাও অনেক। মধুকে আমরা প্রাকৃতিক ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করতে পারি ।চলুন আজকে আমরা জানবো মধুর ব্যবহার।মধু দিয়ে স্বাস্থ্য রক্ষার প্রাকৃতিক উপায় থেকে শুরু করে, শক্তি ও রোগ নিরাময় প্রক্রিয়া। 

পেজ সূচিপত্র : মধু দিয়ে স্বাস্থ্য রক্ষার প্রাকৃতিক উপায় - শক্তি থেকে রোগ নিরাময়। 

মধু দিয়ে স্বাস্থ্য রক্ষার প্রাকৃতিক উপায়গুলো কি কি 

মধু দিয়ে স্বাস্থ্য রক্ষার বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে। কারণ মধুতে রয়েছে বিভিন্ন প্রকার উপকারী উপাদান।  যা দিয়ে যেমন দেহের ক্ষয় পূরণ বৃদ্ধি সাধন হয় তেমনি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ে। 

মূলত মধুতে আছে গ্লুকোজের মত শর্করা দেশের জন্য খুবই উপকারী একটি শক্তি প্রদান করতে সহায়তা করে তাছাড়াও মধুতে রয়েছে ভিটামিন বি ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। 

তাছাড়াও মধুতে আছে পটাশিয়াম, ফসফরাস ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, জিংক ম্যাগনেশিয়াম যা শারীরবৃত্ত কাজের জন্য, হাড়ের জন্য, হার্টের জন্যও বেশ উপকারী।

তাছাড়া মধুতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা কোষ গঠন এবং কোষ রক্ষায় সাহায্য করে।মধুতে প্রোটিনের ঘাটতি দূর করে কারণ মধুতে আছে এমিনো এসিড। অ্যামিনো এসিড মূলত শরীরের জন্য অনেক উপকারী। 

স্বাস্থ্য রক্ষায় মধুতে কি কি পুষ্টি উপাদান রয়েছে।

মধুতে নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান থাকে। যেসব বুঝতে উপাদান সকল বয়সের মানুষের জন্য প্রয়োজন। শিশু অথবা প্রাপ্তবয়স্ক কিংবা বৃদ্ধ সকলের জন্য মধুর উপকারীতা রয়েছে। মধুতে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চলুন আজ আমরা জানব মধুতে কি কি পুষ্টি উপাদান রয়েছে। 

  • ভিটামিন মধুতে রয়েছে ভিটামিন। ভিটামিন বি, ভিটামিন সি যেগুলো শরীরের জন্য খুবই উপকারী। মানুষ তার স্বাভাবিক জীবন পরিচালনার জন্য ভিটামিনের গুরুত্ব অপরিসীম। মধুতে প্রচুর পরিমাণে  ভিটামিন  পাওয়া যায়। যা মূলত এক চামচ মধু খেলেই ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ হয়ে থাকে। প্রতিদিন মূলত মধু পান করতে পারেন এবং প্রত্যেকটি মানুষের জন্যই ভিটামিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি জিনিস। যা প্রত্যেকটা মানুষের শরীরে দরকারী। 
  • মধুতে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট। মূলত মধুতে থাকা কার্বোহাইড্রেট হজম শক্তিতে সহায়তা করে। কোন খাবার হজম করতে মধুতে থাকা কার্বোহাইড্রেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মধুর প্রধান কার্বোহাইড্রেট হচ্ছে গ্লুকোজ এবং ফ্রুক্টোজ।  কার্বোহাইড্রেট দেহের জন্য খুবই উপকারী। মূলত ৭০% থেকে ৮০% কার্বোহাইড্রেট মধুতে পাওয়া যায়। 
  • মধুতে আছে এন্টিঅক্সিডেন্ট। যা ক্ষয় পূরণের পাশাপাশি বৃদ্ধি সাধনও ঘটায়। এন্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সারের রোগ নিরাময়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মূলত বাংলাদেশে ক্যান্সার রোগী দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। সকলের উচিত প্রতিনিয়ত মধু পান করা। যার মাধ্যমে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। 
  • মধুতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের খনিজ পদার্থ। খনিজ পদার্থ শরীরের রোগ প্রতিরোধ করে থাকে। এই খনিজ পদার্থ দাঁত এবং হাড়ের জন্য খুব উপকারী।  মধুতে থাকা খনিজ পদার্থ গুলো হলো পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম,  ফসফরাস, আয়রন ও জিঙ্ক। যেগুলো শরীরের জন্য খুব উপকারী। মানুষকে শক্তিশালী করতে মধুতে থাকা এসব খনিজ পদার্থ গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এসব খনিজ পদার্থ শরীরের বিভিন্ন শারীরবৃত্ত কাজে ভূমিকা রাখে। যার দ্বারা মানুষ এনার্জি ফিল করে এবং অনেক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়।  
  • মধুতে থাকা অ্যামিনো এসিডের  কারণে পেশি গঠন সহজ হয়। কোষ পুনরায় কোষ গঠন হয়। এগুলো শরীরের জন্য খুব উপকারী। অল্প একটু মধুতেই আমরা বেশ পরিমাণ অ্যামিনো এসিড পেয়ে থাকি। যেগুলো আমাদের যথেষ্ট শক্তি গঠনে সাহায্য করে। শারীরিক কাজে ভূমিকা পালন করে। 
  • মধুতে এন্ট্রি ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। যেগুলো শরীরবৃীত্তয় কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে। রোগ নিরাময়ে কাজ করে যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। 
  • মধু মুলত প্রাকৃতিক চিনি। মানুষ মধুর দ্বারা মিষ্টি চিনির স্বাদ গ্রহণ করে। বিভিন্ন স্থানের মধু বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। অবস্থান ভেদের কারণে মধুর স্বাদ  কোয়ালিটি ভিন্ন রকমের হয়ে থাকে।

মধুতে থাকা প্রত্যেকটি জিনিস খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এর দ্বারা মানুষের বিভিন্ন উপকার হয়ে থাকে  প্রত্যেকটি মানুষের মধু পান করা উচিত। কারণ এটি শরীরের বিভিন্ন ক্ষতি পূরণ করে থাকে। যারা প্রতিনিয়ত মধু পান করে, তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও অন্যান্যদের চেয়ে বেশি। 

নবজাতক শিশুর কি মধু খাওয়া উচিত

আমরা অনেকেই জানতে চাই নবজাতক শিশুর জন্য কি মধু পান করা উচিত। চলুন আজ আমরা জানব বিজ্ঞানীরা কি বলে। 

বিজ্ঞানীদের পরামর্শ অনুযায়ী শিশুকে মধু খাওয়ানো উচিত নয়। মধুতে থাকে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া। যা শিশুর বিভিন্ন ক্ষতি হতে পারে। এমনকি শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।  কারণ ১ বছরের কম বয়সী শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। একটি শিশু এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দ্বারা মধুতে থাকা ব্যাকটেরিয়া মোকাবেলা করা অনেক সময় কঠিন হয়ে থাকে। যা মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই নবজাতক শিশুর মধু খাওয়ানো উচিত নয়। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা  বা world health organisation (WHO) এর পরামর্শ অনুযায়ী, নবজাতক শিশুকে মধু খাওয়ানো উচিত নয়। তারা এটি সম্পূর্ণরুপে নিষেধ করেছেন। নবজাতিক শিশুকে মধু খাওয়ানো  যাবে না। এতে শিশুর বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হতে পারে। 

নবজাতক শিশুকে কখনোই মধু খাওয়ানো উচিত নয়।  কিন্তু এক বছর পরে শিশুকে মধু খাওয়ানো যেতে পারে। এক বছরের আগের কোন নবজাতক শিশু যার বয়স এক বছরের কম এমন কোন শিশুকে মধু খাওয়ানো উচিত নয়।


স্বাস্থ্য রক্ষায় ছেলেদের মধু খাওয়ার উপকারিতা 

  • মধুর বিভিন্ন উপকারিতা  রয়েছে। এখন আমরা জানবো স্বাস্থ্য রক্ষায় ছেলেদের জন্য মধু খাওয়ার উপকারি দিক গুলো। 
  • মধুতে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট রয়েছে, যা খুবই উপকারী। কার্বোহাইড্রেট এর কারণে ছেলেরা খুব তাড়াতাড়ি শক্তি অনুভব করে।  ছেলেদের জন্য এটি খুবই প্রয়োজনীয়। কারণ ছেলেরা বিভিন্ন কাজ বা কর্মে লিপ্ত থাকে। তাদের ইনস্ট্যান্ট এনার্জির প্রয়োজন হয়।  
  • মধু তে থাকা এন্ট্রি অক্সিডেন্ট এর দারা ছেলেদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। যা সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। এবং রোগ নিরাময় ভূমিকা রাখে।
  • মধুতে রয়েছে এনজাইম যা ছেলেদের হজম প্রক্রিয়াতে সাহায্য করে। ছেলেরা সাধারণত বিভিন্ন ধরনের খাবার খেয়ে থাকে, মধুতে থাকা এসকল এনজাইম খাবারগুলোকে তাড়াতাড়ি হজম করতে সাহায্য করে। যাদের যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে মধু খেলে ভালো ফলাফল পেতে পারেন। 
  • মধু খেলে ছেলেদের হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।  মধুর দ্বারা শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল বেরিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের যুক্ত হয়। মধুতে বিভিন্ন উপাদান রয়েছে যে সকল উপাদান হৃদরোগের বিপক্ষে কাজ করে যার কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি কমতে থাকে। 
  • মিষ্টি তো সবাই পছন্দ করে। কিন্তু চিনির মিষ্টি দেহের অনেক ক্ষতি করতে পারে। এক্ষেত্রে মধুতে থাকা মিষ্টি খেলে মন ভালো থাকে। যার দ্বারা মানসিকভাবে প্রশান্তি অনুভব করে। এর দ্বারা কর্মদক্ষতা  বৃদ্ধি পায়। 
  • প্রতিদিন নিয়ম অনুযায়ী মধু খেলে ছেলেদের প্রজনন শক্তি বৃদ্ধি পায়। শুক্রাণুর ক্ষমতা উন্নত হয় এবং প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। কারণ মধুতে রয়েছে ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, জিংক, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম যেগুলো শুক্রাণু উন্নত করতে সাহায্য করে । 
  • প্রতিনিয়ত মধু খেলে ত্বক ভালো থাকে। মধু ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। মধুতে থাকা বিভিন্ন উপাদান ত্বক সতেজ রাখতে সাহায্য করে। 
  • ছেলেদের ওজন বাড়তে পারে। যারা ওজন কমাতে চায় তারা প্রতিনিয়ত নির্দিষ্ট পরিমাণে  মধু খেলে ছেলেদের ওজন আস্তে আস্তে কমতে থাকে। অথবা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।

স্বাস্থ্য রক্ষায় মেয়েদের মধু খাওয়ার উপকারিতা 

মধুর দ্বারা যে শুধুমাত্র ছেলেদের উপকার হয় বিষয়টি এমন না। প্রতিনিয়ত মধু পান করলে এরদ্বারা মেয়েদেরও অনেক উপকার হয়ে থাকে। এখন আমরা আলোচনা করবো  স্বাস্থ্য রক্ষায় মেয়েদের মধু খাওয়ার উপকারিতা এবং বিভিন্ন দিকগুলো তুলে ধরব। 

  • মেয়েরা মূলত ত্বকের যত্ন নিয়ে অনেক বেশি সচেতন। প্রতিনিয়ত মধু পান করলে মেয়েদের ত্বক ভালো থাকে। ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখে। এবং বিভিন্ন ত্বকের সমস্যার সমাধান করে ত্বকের সমস্যা স্থায়ীভাবে রোধ করে। 
  • মেয়েরা তাদের চুল নিয়ে অনেক সচেতন। প্রতিনিয়ত মধু পান করলে চুল পড়া কমে। চুলের বৃদ্ধি সাধন হয়। মধু চুল বাড়াতে সাহায্য করে। এবং মধুর করণে চুল পড়া থেকে রক্ষা করে। মধু মূলত চুলের উজ্জ্বলতা রাখতে সাহায্য করে। এর দ্বারা চুলকে মজবুত ও স্বাস্থ্যকর রাখে। 
  • মেয়েদের বিভিন্ন কারণে হরমোনের সমস্যা দেখা দেয়। বিভিন্ন কারণে মেয়েদের হরমোন চেঞ্জ হয়ে যেতে পারে। প্রতিনিয়ত মধু পান করলে মেয়েদের হরমোনের সমস্যা সমাধান হয়। 
  • মেয়েদের ওজনের নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে মধু খুবই ভূমিকা পালন করে। কারণ এর দ্বারা মেদ কমতে সাহায্য করে বা ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে। 
  • প্রতিনিয়ত মধু পান করলে মেয়েদের মানসিক সমস্যা দূর হয় এর দ্বারা সুস্থ থাকা যায়। 
  • মধুতে বিভিন্ন পদার্থ থাকে। যে পদার্থ মেয়েদের মাসিকের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। যার কারণে প্রত্যেকটি মেয়ের উচিত প্রতিদিন মধু পান করা।
  • প্রতিনিয়ত মধু পান করলে মেয়েদের প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। মেয়েদের প্রজনন সমস্যা সমাধান হয়।
  • প্রতিনিয়ত মধু পানের দ্বারা মেয়েদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা সমাধান হয়। এতে বিভিন্ন পদার্থ রয়েছে যা মানসিক ভাবেও তরতাজা রাখতে সাহায্য করে। 

খালি পেটে মধু খেলে কী হয়

খালি পেটে মধু খেলে বিভিন্ন ধরনের উপকার হয়ে থাকে। আমরা টু দ্য পয়েন্ট উপকার গুলো দেখি। খালি পেটে মধু খেলে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে। তারা খালি পেটে মধু খেলে এর কার্যকারিতা পেতে পারে।

গরম পানির সাথে মধু খালি পেটে খেলে ওজন ক্ষমতা সাহায্য করে। ওজন কমানোর জন্য খালি পেটে মধু পান করা খুবই কার্যকরী। যাদের ওজন বেশি তারা খালি পেটে মধু খেলে এর দ্বারা ভালো ফলাফল পাবে। এক্ষেত্রে গরম পানির সাথে মধুর মিশ্রিত করে খাওয়াটা উত্তম। খালি পেটে পানি মিশ্রিত মধু খাওয়া বেশি কার্যকরী। খালি পেটে মধু খেলে এর দ্বারা শরীরে শক্তি প্রদান করে দীর্ঘক্ষণ কর্মক্ষেত্রে সজাগ রাখতে সাহায্য করে।

মধু খেলে কি হয় ওজন বাড়ে নাকি কমে

মধু খেলে ওজন বাড়তে পারে এবং কমতে । আমরা প্রথমে জানব মধু খাওয়ার ফলে কিভাবে ওজন বাড়বে। কেউ যদি মধু পরিমানের তুলনায় অতিরিক্ত খায় এর দ্বারা তার ওজন বাড়তে পারে। কারণ মধুতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি থাকে এবং তার যদি ক্যালরি খরচ না করে তাহলে সে ক্যালরি এগুলো শরীরে জমা হয়ে ওজন বাড়তে পারে। অন্যদিকে যারা পরিমাণ মতো মধু খায় তাদের ওজন কমতে পারে। কারণ মধুতে রয়েছে  যা ক্ষুধা নিবারণের সাহায্য করে। অল্প একটু মধু খেলে অনেকক্ষণ ক্ষুধা না লাগার কারণে। খাবার কম গ্রহণ করে ওজন কমতে পারে। তাছাড়াও গরম পানিতে মধু মিশ্রিত খেলে অথবা লেবু ও মধু মিশ্রিত খেলে ওজন কমতে থাকে। মূলত যাদের ওজন বেশি তারা পরিমাণ মতো মধু খেলে এটি তাদের ওজন কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। 

ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য মধু খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা

ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য মধু খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা দুটি রয়েছে। চলুন আমরা প্রথমে উপকারিতা জানি। মধু হচ্ছে প্রাকৃতিক চিনি যাদের মিষ্টি পছন্দ তারা চিনির বিকল্প হিসেবে মধু খেতে পারে। কিন্তু সেটা পরিমাণ মতো খেতে হবে। অন্যদিকে মধু খেলে ক্ষুধা নিবারন হয়। যা ডায়াবেটিকস বৃদ্ধি হ্রাস করে। মধুতে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা বিভন্ন ক্ষতি ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। 

এখন আমরা জানবো মধুর অপকারিতা। মধুর উপকারিতা থাকলেও এর অপকারীতাও রয়েছে। ডায়াবেটিসের রোগীরা যদি বেশি পরিমাণে মধু পান করে। এক্ষেত্রে এটা তাদের শরীরের জন্য অনেক ক্ষতির কারণ হতে পারে। কারণ মধুতে রয়েছে গ্লুকোজ এবং ফ্রূকটোজ এর কারণে ডায়াবেটিস বাড়তে পারে। তাছাড়াও প্রয়োজনের তুলনায় বেশি মধু পান করলে ক্যালরি জমা হয়। এই ক্যালোরি গুলোর কারণে শরীরের ওজন বাড়তে পারে। এক্ষেত্রে রোগীদের করণীয় হচ্ছে ডাক্তারের  পরামর্শ নিয়ে পরিমাণ অনুযায়ী  মধু পান করা। তা না হলে এর দ্বারা বিভিন্ন রকমের ক্ষতি হতে পারে। 

স্বাস্থ্য রক্ষায় মধু খাওয়ার সঠিক পরিমাণ এবং সঠিক সময়।

আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি মধু খাবার বিভিন্ন রকমের উপকারিতা রয়েছে। কিন্তু মধু পান করলে শরীরের বিভিন্ন ক্ষতিও হতে পারে। এক্ষেত্রে মধু খাওয়ার সঠিক পরিমাণটি জানা জরুরী। মূলত প্রাপ্তবয়স্কদের এক থেকে দুই চামচ মধু খাওয়া উপযোগী। এর চেয়ে বেশি মধু খেলে ক্ষতি হতে পারে।

 তাছাড়াও নবজাতক শিশু বা শিশুদের জন্য এক চামচ করে মধু খেতে হবে। এক চামচ এর চেয়ে মধু বেশি খাওয়া উচিত নয়।

 অন্যদিকে মধু খাওয়ার সঠিক সময় হচ্ছে সকালে ঘুম থেকে উঠে খাওয়া। এতে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। সারাদিন এনার্জি পাওয়া যায়। তাছাড়াও দুপুরে খাবারের আগে এক চামচ মধু খেয়ে নিলে। এতে অনেক ক্ষুধা নিবারণ হয়। যার কারণে অতিরিক্ত খাবার থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তাছাড়াও মধু পানি মিশ্রিত খেলে ওজন কমাতে ভূমিকা রাখে। এক্ষেত্রে সঠিক পরিমাণ হচ্ছে দিনে সর্বোচ্চ এক থেকে দুই চামচ মধু পান করা।  অন্যদিকে সঠিক সময় হচ্ছে সকালে ঘুম থেকে উঠে অথবা খাবারের আগে দিনে ২ বার এর কিন্তু বেশি নয়। 


শেষ বিশ্লেষণ মধুর উপকারিতা এবং অপকারিতা

মধুর বিভিন্ন উপকারিতা এবং অপকারিতা রয়েছে। সঠিক পরিমাণে মধুপান করলে এর দ্বারা শরীরের বিভিন্ন উপকার সাধন হয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। কোষের ক্ষয়পূরণ হয়। সঠিক পরিমাণে মধুপান করলে সঠিক নিয়ম মেনে মধু পান করলে শিশু, প্রাপ্তবয়স্ক বা বয়স্ক মানুষ সকলের জন্য উপকার রয়েছে। এটি ওজন কমাতে সাহায্য করে অন্যদিকে বাড়াতেও সাহায্য করে। 

যদিও এর বিভিন্ন অপকারিতাও রয়েছে। যদি কোন ব্যক্তি অতিরিক্ত পরিমাণে মধু পান করে এর দারা শরীরের বিভিন্ন ক্ষতি হয়। তাই শেষ কথা অনুযায়ী আমরা মধু পান করলেও পরিমানের তুলনায় বেশি পান করব না। ডাইবেটিকসের রোগীদের জন্য মধু পানে বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে। 


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সহায়তা আইটিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url